গারাং কুয়োলো ছিলেন ফাঁকায়, বলটাও পেয়ে গিয়েছিলেন, নিয়ে বসেছিলেন শটটাও। আর্জেন্টিনার শেষ আশা হয়ে কেবল এমিলিয়ানো মার্টিনেজ ছিলেন সামনে। একটু এদিক ওদিক হলেই খেলাটা চলে যেত অতিরিক্ত সময়ে। মিনিট বিশেক আগে ক্রেইগ গুডউইনের শট এনজো ফের্নান্দেজের মুখে লেগে দিক বদলে যখন জড়াল আর্জেন্টিনার জালে, এরপর থেকেই আলবিসেলেস্তেরা ছিল বেশ নড়বড়ে। খেলাটা অতিরিক্ত সময়ে গড়ালে হতে পারত যে কোনো কিছু!
তবে আর্জেন্টিনাকে সেই বিপদের মুখে পড়তে দেননি এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। শটটা ঠেকিয়েছেন, সঙ্গে বাঁচিয়ে রেখেছেন সাড়ে চার কোটি আর্জেন্টাইন আর পৃথিবীজুড়ে অগুণতি আর্জেন্টাইন ভক্ত-সমর্থকের আশাও। লিওনেল মেসির ১০০০তম ম্যাচে আর্জেন্টিনাকে তিনি পৌঁছে দিয়েছেন শেষ আটে।
শেষ সময়ে কুয়োলোর শটটা আর্জেন্টাইনদের জন্য আরও বেশি দুর্ভাবনা নিয়ে আসতে পারত, অস্ট্রেলিয়ার জন্য হয়ে যেতে পারত জয়সূচক গোলের সুযোগও। হয়নি আরেক মার্টিনেজের কল্যাণে। ‘আত্মঘাতী’ গোলের ধাক্কাটা তখনো হজম করে উঠতে পারেনি আর্জেন্টিনা রক্ষণ। তখনই বক্সের একটু সামনে থেকে সতীর্থের সঙ্গে বল দেওয়া নেওয়া করে, ডিফেন্ডার নিকলাস অটামেন্ডিকে ঘোল খাইয়ে চলে গিয়েছিলেন গোলমুখে, শট নিলেই সমতায় ফিরবে ম্যাচ!
সেই মুহূর্তে বুক চিতিয়ে সামনে এগিয়ে এলেন আরেক ‘মার্টিনেজ’। স্লাইডিং ট্যাকলে কর্নারের বিনিময়ে যেভাবে ঠেকালেন শটটা, তা যেন মনে করিয়ে দিল ২০১৪ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে হ্যাভিয়ের মাসচেরানোর আরিয়েন রবেনকে ঠেকিয়ে দেওয়ার দৃশ্যটা। সেই এক ট্যাকল আর্জেন্টিনার ২-১ গোলের লিড জিইয়ে রেখেছিল।
লিডটা অবশ্য বাড়তে পারত। যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিটে মেসি অজি রক্ষণের মাঝ দিয়ে রীতিমতো হেঁটে গিয়ে পাস বাড়ান পাশে থাকা আরেক ‘মার্টিনেজ’কে, লাওতারো মার্টিনেজ সেখান থেকে বলটা লক্ষ্যেই রাখতে পারেননি, যার খেসারত আর্জেন্টিনা আরেকটু হলে দিয়েই বসেছিল যোগ করা সময়ের শেষ মিনিটে। তখন এমিলিয়ানো ত্রাতা হয়ে না এলে, লাওতারো ‘নায়ক’ই হতেন।
তবে সেটা হয়নি, তাই মেসির মাইলফলক ছোঁয়ার ম্যাচে লিসান্দ্রো আর এমিলিয়ানো মার্টিনেজই হয়ে রইলেন আর্জেন্টিনার নায়ক।