২০১৮ সাল থেকে ভারতের জার্সিতে নিয়মিত হয়ে উঠেছেন ঋষভ পন্ত। গত ছয় মাসে দেখিয়েছেন চোখ ধাঁধানো সাফল্য। প্রথমে অস্ট্রেলিয়া সফরে ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলেছেন। এরপর দেশের মাটিতে টেস্ট জিতিয়েছেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। টেস্ট ক্যারিয়ারে এখনো তিন বছর হয়নি। এর মধ্যে এক ম্যাচে সর্বোচ্চ ১১ ডিসমিসাল, টেস্টে দ্রুততম ১ হাজার রান করা ভারতীয় উইকেটকিপার হওয়ার মতো বেশ কিছু রেকর্ড তাঁর দখলে। এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যানকে বলা হচ্ছে বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম ভবিষ্যৎ তারকা।
অনেক কাঠখড় পুড়িয়েই জাতীয় দলে এসেছেন পন্ত। তাঁর ক্রিকেটার হয়ে ওঠার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন দিল্লির স্থানীয় কোচ তারাক সিনহা। অভিজ্ঞ এই কোচের হাতের তালুর ওপর ক্রিকেটার পন্থের বেড়ে ওঠা। বড় ক্রিকেটার হওয়ার জন্য পন্থ কতটা অধ্যবসায় ছিলেন, সিনহার চেয়ে ভালো আর কে জানেন! অনুশীলনে সিনহাকে খুশি করতে না পারায় তাঁর কাছে ক্ষমা চাওয়ার জন্য রাত সাড়ে তিনটায়ও তাঁর বাসায় গিয়েছিলেন পন্থ। স্থানীয় গণমাধ্যমে সেই স্মৃতি স্মরণ করেছেন সিনহা।
তারুণ্যের বেশির ভাগ সময় দিল্লির বিখ্যাত সন্নেট ক্লাবের হয়ে খেলেছেন পন্ত। সে ক্লাবের প্রধান কোচ ছিলেন সিনহা। একদিন নেট অনুশীলনে গুরুকে সন্তুষ্ট করতে পারেননি তিনি। কোচের হতাশাটাও বুঝতে পেরেছিলেন পন্ত। উপায়ান্তর না দেখে সে রাতেই কোচের বাসায় গিয়েছিলেন। সে ঘটনাটি সম্পর্কে সিনহা বলেন, ‘দক্ষিণ দিল্লির সন্নেট ক্লাবের হয়ে একদিন নেট অনুশীলনের সময় আমি ওর ওপর খুব হতাশ হয়েছিলাম। সে পুরো রাত ঘুমাতে পারেনি। আনুমানিক রাত সাড়ে তিনটায় সে আমার বাসায় এসে দরজায় নক করে। সে তার দিল্লির বাসা থেকে এক ঘণ্টা গাড়ি চালিয়ে আমার বৈশালির বাসায় এসেছিল।
একজন কোচের কাছে নিবেদনের এমন উদাহরণের চেয়ে ভালো আর কিই-বা লাগতে পারে! খুশি হয়েছিলেন সিনহাও, ‘সে সময় খুব ভালো লেগেছিল। কারণ, সে আমাকে হতাশ দেখতে চায়নি। তাই ক্ষমা চাইতে এসেছিল। মাঝরাতে এমন একটি ঘটনা হৃদয় স্পর্শ করে গিয়েছিল। ওর সঙ্গে কঠোর হয়েছিলাম বলে আমার পরিবারও আমার ওপর রাগ হয়েছিল।’
২০১৭ সালে টি-টোয়েন্টি দিয়ে ভারত দলে অভিষেক হয় পন্তের। পরের বছরই টেস্ট ও ওয়ানডে দলে জায়গা করে নেন তিনি। অনেকেই ২৩ বছর বয়সী পন্থকে ভবিষ্যতে ভারতের অধিনায়ক ভাবছেন। তবে শিষ্যকে নিয়ে এখনই এত বড় মন্তব্য করতে চান না সিনহা, ‘এখনই এটা নিয়ে বলা খুব আগেভাগে হয়ে যায়। পন্তকে আগে খেলোয়াড় হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। ধোনি ও বিরাট কোহলির দিকে তাকালে দেখা যাবে অধিনায়কত্ব পাওয়ার আগে তাঁরা অনেক কিছু করেছিলেন।