বিশ্বকাপকে সরকার বিরোধী প্রতিবাদের মঞ্চ বানালেও ফুটবলটা ভুলে যায়নি ইরান। সেটা যায়নি বলেই উজ্জীবিত এক পারফরম্যান্সে ওয়েলসকে ২-০ গোলে হারিয়ে বিশ্বকাপে প্রথম জয়ও তুলে নিয়েছে। তাতে নকআউটে যাওয়ার আশা এখনও বেঁচে রইলো তাদের।
ইংল্যান্ডের কাছে শুরুর ম্যাচে ৬-২ গোলে বিধ্বস্ত হওয়া ইরান এদিন জাতীয় সংগীত গেয়েই মাঠে খেলা শুরু করেছে। দ্বিতীয়ার্ধে দুর্দান্ত খেলা ইরানকে দেখে মনে হচ্ছিল এই ম্যাচটায় বুঝি পয়েন্ট ভাগাভাগিই হবে। বার বার ওয়েলসের রক্ষণে হানা দিলেও ফিনিশিং টাচটা দিতে পারছিল না। তবে পুরো ম্যাচের দৃশ্যপট বদলায় ৮৬ মিনিটে ওয়েলস দশ জনের দলে পরিণত হলে।
বার বার আক্রমণে যাওয়া ইরানের হয়ে ৮৬ মিনিটে দারুণ সুযোগ তৈরি করতে যাচ্ছিলেন তারেমি। ক্ষীপ্র গতিতে ওয়েলসের জালের দিকে ছুটে যাচ্ছিলেন, তখন ভুল করে বসেন ওয়েলস কিপার হেনেসি। বক্সের বাইরে ছুটে এসে তারেমির গতি রোধ করতে গিয়ে পা উচিয়ে বলে শট নিতে গিয়েছিলেন। তাতে তারেমির ওপর পড়ে যান ওয়েলস গোলকিপার। বিধিবহির্ভুত হওয়ায় রেফারি শুরুতে হলুদ কার্ড দিয়েছিলেন। তার পর রিভিউ দেখে সরাসরি লাল কার্ড দেখানো হয় হেনেসিকে। যা ছিল কাতার বিশ্বকাপের প্রথম লাল কার্ডও।
তার পরই রক্ষণ এলোমেলো হয়ে যায় গ্যারেথ বেলদের। যোগ হওয়া সময়ের শেষ ভাগে ইরানিদের আক্রমণ প্রতিহত করার সামর্থ্য তাদের ছিল না। ৯০+৮ মিনিটে ইরানকে প্রথম আনন্দের উপলক্ষ এনে দেন চেশমি। দুর্বল ডিফেন্সের সুযোগ নিয়ে তিন মিনিট পর দ্বিতীয় গোলটি করেন রামিন।
অথচ ম্যাচটা ছিল ওয়েলস অধিনায়ক গ্যারেথ বেলের রেকর্ডের মঞ্চ। আহমেদ বিন আলী স্টেডিয়ামে এই ম্যাচ দিয়েই দেশের হয়ে সর্বাধিক ম্যাচ খেলার কীর্তি গড়েছেন। জমজমাট প্রথমার্ধও উপহার দেন তারা। যদিও গোলের দেখা পায়নি কোনও দল। শুরুর সুযোগটাও পেয়েছিল ওয়েলস। ১২ মিনিটে লক্ষ্য বরাবর প্রথম শটটা নিয়েছিলেন মুর। ডানপ্রান্ত দিয়ে রবার্টসের বাঁকানো ক্রস থেকে মুর টোকা দিয়েছিলেন। সেটি সরাসরি ইরান গোলকিপার হোসেইনির কাছে চলে গেলে তা দারুণ দক্ষতায় ফিরিয়ে দিয়েছেন। চার মিনিট পর অবশ্য ইরান ঠিকই জাল কাঁপিয়েছিল। কিন্তু ভার রিভিউর পর কপাল পোড়ে তাদের। অফসাইডে বাতিল হয়ে যায় সেই গোল। প্রথমার্ধে ওয়েলসের আক্রমণ গুলোই অপচয় হয়েছে সবচেয়ে বেশি। ঠিকমতো ফিনিশিং টাচটা দিতে না পারায় ইরান খুব সহজেই তা প্রতিহত করতে পেরেছে।