কাতার বিশ্বকাপ ফাইনালে আর্জেন্টিনার প্রতিপক্ষ যেই হোক না কেন তাদের জন্য দুঃসংবাদ হচ্ছে প্রতিপক্ষ শিবিরে আগ্রাসন চলানোর জন্য একজন সঙ্গী পেয়ে গেছেন লিওনেল মেসি। বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমি-ফাইনালে মরক্কোর মোকাবেলা করতে যাওয়া বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স তাদের হোটেল কক্ষে বসেই দেখেছেন ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে জুলিয়ান আলভারেজের চোখ ধাঁধানো পারফরম্যান্স। যার জোড়া গোলে প্রথম সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনার কাছে ৩-০ গোলে হেরে ফাইনালে ওঠার স্বপ্ন ভঙ্গ হয়েছে ক্রোয়েশিয়ার।
পেনাল্টি থেকে গোল করে আর্জেন্টিনার হয়ে প্রথম লক্ষ্যভেদ করেছিলো মেসি। এরপর ক্রোয়েশিয়ার রক্ষণকে তছনছ করে দিয়েছেন আলভারেজ। নিজেদের অংশ থেকে বল নিয়ে দ্রুত গতিতে প্রতিপক্ষের ডি বক্সে ঢুকে গোল করে আর্জেন্টিনাকে ২-০ গোলে এগিয়ে দেন তিনি। দ্বিতীয়ার্ধে ফের গোল করে আর্জেন্টিনার জয়কে নিরাপদ করে দেন ৯ নম্বর জার্সির ওই স্ট্রাইকার। মেসির বানিয়ে দেওয়া বলটি দারুন দক্ষতায় জালে জড়ান তিনি।
কাতার বিশ্বকাপে এই নিয়ে সর্বমোট চার গোল করেছেন আলভারেজ। আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতা মেসি ও ফরাসি তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পের চেয়ে মাত্র এক গোলে পিছিয়ে আছেন আলভারেজ।
গতকাল অসাধারণ ম্যাচ জয়ের পর আলভারেজ বলেন, ‘আমরা এর (শিরোপা) দাবিদার। আজ আমরা দারুন ম্যাচ খেলেছি। আমরা এখন ফাইনালে, যেটি আমরা চেয়েছিলাম। এখন আমাদের বিশ্রাম নিতে হবে। আশা করি রোববার একটি ভালো ম্যাচ হবে। আমি ব্যক্তিগত ও দলগতভাবে এই পর্যায়ে আসতে পেরে খুশি। আমরা যেভাবে খেলতে পেরেছি তাতে খুশি। আমরা ফাইনালে খেলার দাবিদার। এটাই আমরা চেয়েছিলাম।’
এই টুর্নামেন্টের শুরুতে মূল একাদশে স্থান পেতে রীতিমত লড়াই করতে হয়েছে আলভারেজকে। প্রথমদিকে ইন্টার মিলানের লাউতারো মার্টিনেজকেই অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন কোচ লিওনেল স্কালোনি। সৌদি আরবের কাছে ২-১ গোলে হেরে যাওয়া ম্যাচে বেঞ্চে বসে ছিলেন এই ফরোয়ার্ড। মেক্সিকোর বিপক্ষে ২-০ গোলে জয় পাওয়া ম্যাচেও একাদশের বাইরে ছিলেন তিনি।
গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে পোল্যান্ডের বিপক্ষে একাদশে সুযোগ পান আলভারেজ। ২-০ গোলে ওই ম্যাচ জিতে শেষ ষোলো নিশ্চিত করে আর্জেন্টিনা। ওই ম্যাচে দ্বিতীয় গোলটি এসেছিলো আলভারেজের পা থেকে। এরপর থেকেই মূল একাদশে স্থায়ী জায়গা পান আলভারেজ। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শেষ ষোলোর লড়াইয়ে ২-১ গোলে জেতা ম্যাচেও একটি গোল করেন তিনি। কোয়ার্টার ফাইনালে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষেও উপহার দেন দুর্দান্ত পারফরম্যান্স।
ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে সেমিফাইনালে পুরো মাঠ জুড়ে দুর্দান্ত নৈপুন্যে ক্রোয়েট রক্ষণকে বারবার তছনছ করে দুটি গোলও আদায় করে নেন তিনি। আর্জেন্টাইন কোচ স্কালোনি বলেন, ‘জুলিয়ান খুবই ভালো খেলেছেন। তার গোলের জন্য নয়, বরং কঠোর পরিশ্রম করে সে দলকে সহায়তা করেছে। তার যে বয়স তাতে সে চাইবেই পৃথিবী জয় করতে। এটাই স্বাভাবিক। সে এমন একজন ছেলে যাকে তুমি যা বলবে তাই করবে।’