২০১৩ থেকে ২০২১। নেপালের কাঠমান্ডু থেকে কাতারের দোহা। দসরথ রঙ্গশালা থেকে জসিম বিন হামাদ স্টেডিয়াম। ৮ বছরের ক্যারিয়ারে নতুন মাইলফলক স্পর্শ করতে যাচ্ছেন জামাল ভূঁইয়া।
৩ জুন আফগানিস্তানের বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ফিরতি ম্যাচ। সবকিছু ঠিক থাকলে ওই দিন জাতীয় দলের জার্সিতে ৫০তম ম্যাচ খেলতে নামবেন ডেনমার্ক প্রবাসী এ ফুটবলার। আগাম অভিনন্দন অধিনায়ককে।
বর্তমান জাতীয় দলের সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা জামাল ভূঁইয়ার। ৪৯ ম্যাচ খেলে তিনি এখন পঞ্চাশের দুয়ারে দাঁড়িয়ে। ২০১৩ সালের ৩১ আগস্ট কাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে নেপালের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে লাল-সবুজ জার্সিতে অভিষেক হয়েছিল, জামাল ৫০তম ম্যাচটি খেলতে যাচ্ছেন আফগানিস্তানের বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের।
বাবা-মায়ের কাছে মাতৃভূমির গল্প শুনেশুনে বড় হওয়া জামাল ১০ বছর আগে বাংলাদেশে এসেছিলেন লাল-সবুজ জার্সিতে ফুটবল খেলার স্বপ্ন নিয়ে। কিন্তু আগমনের শুরুটা তার মোটেও ভালো ছিল না। ২০১১ সালে জাতীয় দলের ট্রায়াল দিতে এসে কন্ডিশনের সঙ্গে কিছুতেই নিজেকে মানিয়ে নিতে পারছিলেন না জামাল, ফিরে গিয়েছিলেন ডেনমার্কে। কিন্তু আশা ছাড়েননি, আবার আসেন এবং আশা পূরণ হয় ২০১৩ সালে।
জাতীয় দল, ক্লাব ফুটবল। সবক্ষেত্রেই এ সময়ে দেশের ফুটবলের সেরা তারকা জামাল ভূঁইয়া। পাশের দেশ ভারতের ক্লাব কলকাতা মোহামেডানে গিয়েও সুনাম ছড়িয়েছেন দেশের।
শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের হয়ে বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবলে অভিষেক ২০১৪-১৫ মৌসুমে। তারপর শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্রে এক মৌসুম খেলে ৫ বছর ধরে আছেন সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবে। ক্লাবটির অধিনায়কও তিনি। সাইফ থেকেই ধারে কলকাতা মোহামেডানে ১২ ম্যাচ খেলে এসেছেন জামাল।
৮ বছরের ক্যারিয়ার শেষ করে এখন জাতীয় দলের ৫০তম ম্যাচ খেলবেন এই প্লে-মেকার। ডাচ কোচ লোডভিক ডি ক্রুইফের হাত ধরে জাতীয় দলে অভিষেক, ইংলিশ কোচ জেমির অধীনে অপেক্ষায় ফিফটি পূরণের।
এমন এক অবস্থানে দাঁড়িয়ে বেশ পুলকিত জামাল। বুধবার দুপুরে দোহার টিম হোটেল থেকে ফোনে অধিনায়ক জাগো নিউজকে বলছিলেন, ‘যে কোনো ফুটবলারের জন্য জাতীয় দলের হয়ে ৫০তম ম্যাচ দারুণ এক মুহূর্ত। সত্যিই আমি ম্যাচটি নিয়ে খুব রোমাঞ্চিত।’
জামাল ভূঁইয়া কেবল বাংলাদেশেরই নন, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যেই অন্যতম সেরা মিডফিল্ডার। রক্ষণ ও আক্রমণভাগের সঙ্গে সেতু তৈরি করা, ফরোয়ার্ডদের বলের যোগান দেয়া এবং পুরো মাঠ চষে খেলার গুণগুলো দারুণভাবে উপস্থিত জামালের মধ্যে।
ডেনমার্কে কঠিন কৈশোর অতিক্রম করে, মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে এসে ফুটবলের প্রতি ভালোবাসায় বেছে নিয়েছেন মাতৃভূমির লাল-সবুজ জার্সি। গত এশিয়ান গেমস ফুটবলে কাতারের বিপক্ষে গোল করে বাংলাদেশকে প্রথমবারের মতো দ্বিতীয় রাউন্ডে তুলেছিলেন জামাল। দেশের ফুটবলের এই পোস্টারবয় জাতীয় দলের হয়ে খেলতে চান দীর্ঘদিন।