বয়স যেন তার কাছে কেবলই আরেকটা সংখ্যা। ৪৫ বছর ২১ দিন বয়সে যিনি ১৯০ রানের ইনিংস খেলতে পারেন, তাও মাত্র ১৪৯ বলে, দল যখন ধুঁকছে ৮০ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে, তার কাছে বয়সটা সংখ্যা নয়তো কী? কাউন্টি ক্রিকেটের সবচেয়ে বয়স্ক ক্রিকেটার ড্যারেন স্টিভেন্স সম্প্রতি গড়েছেন এমনই এক কীর্তি।
‘বুড়ো’ স্টিভেন্সের ‘তারুণ্যের’ আরেকটা নমুনা মেলে ইনিংসের বাউন্ডারি সংখ্যার দিকে তাকালে। কেন্টের হয়ে গ্ল্যামরগনের বিপক্ষে তিনি ১৯০ রানের ১৫০ই করেছেন চার-ছয় থেকে। ছক্কা ১৫ টি, মেরেছেন সমানসংখ্যক চার।
একটু আফসোসও কি হবে না তার? কাউন্টির ছক্কার রেকর্ডটা যে ছিল মাত্র দুটো ছয় দূরে, ডাবল সেঞ্চুরিটাও তো! অ্যান্ড্রু সাইমন্ডস আর গ্রাহাম নেপিয়ারের ১৬ ছক্কার রেকর্ডটা ভাঙতে পারেননি তিনি। তবে যা করেছেন তাও কম কীসে? স্টিভেন্স যখন উইকেটে আসেন, ৮০ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল কেন্ট। এসেও দেখেন সতীর্থদের আসা যাওয়ার মিছিল। ফলে ১২৮ রান করতেই সাজঘরে ফেরেন ৮ কেন্ট ব্যাটসম্যান।
স্টিভেন্সের প্রতি আক্রমণের শুরু সেখানেই। সতীর্থ মিগুয়েল কামিন্সের সঙ্গে মিলে গড়েন ১৬৬ রানের জুটি। তবে সেটা ‘কামিন্সের সঙ্গে মিলে’ বলার চেয়ে তার একার বলাই যেন বেশি যৌক্তিক। সেই বিশাল জুটিতে যে কামিন্সের অবদান ছিল মোটে এক রান! তাতে একটা ইতিহাসও গড়া হয়ে যায় স্টিভেন্সের। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে এখন এটাই সবচেয়ে বড় জুটি, যেখানে এক ব্যাটারের অবদান ৯০ শতাংশেরও বেশি।
৯২ বলে ছুঁয়েছিলেন ক্যারিয়ারের ৩৬তম শতক। ২৫ বলে করেছেন পরবর্তী অর্ধশতক, আর শতকের পরের ৯০ রান তুলেছেন মোটে ৫৭ বলে! তবে ডাবল সেঞ্চুরি থেকে যখন তিনি ১০ রানের দূরত্বে, তখনই শিকার বনে যান মার্নাস লাবুশেনের। সবচেয়ে প্রবীণ ক্রিকেটার হিসেবে দ্বিশতকের ব্যক্তিগত রেকর্ডটা আর ভাঙা হয়নি তার। কেন্টের ইনিংসের ৬২ শতাংশেরও বেশি রান করে ফেরেন তিনি সাজঘরে। দল থামে ৩০৭ রানে।
তবে সেখানেই শেষ নয় স্টিভেন্স-বীরত্ব। বল হাতে নেমেছিলেন ওপেনিংয়ে। ব্যাট হাতে যার শিকার বনেছিলেন, ফিরিয়েছেন সেই লাবুশেনকে। যার ফলে গ্ল্যামরগানের দিন শেষ হয়েছে ৫৫ রানে দুই উইকেট হারিয়ে। স্টিভেন্স আরও কত কীর্তি তুলে রেখেছেন ম্যাচের পরের দুই দিনের জন্য কে জানে!