তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে দুই দলই একটি করে ম্যাচ জেতে। ফলে শেষ ম্যাচ পরিণত হয়েছিল অলিখিত ফাইনালে। এই ফাইনালে অবশ্য দলের ৬ নিয়মিত ক্রিকেটারদের ছাড়াই খেলতে হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকাকে। আইপিএলের কারণে তারকা ক্রিকেটারদের অনুপস্থিতি তাই বেশ ভালোই ভুগিয়েছে তাদের। তবে এই ম্যাচে বেশ কয়েকটি বদল এনেছে পাকিস্তানও। সব মিলিয়ে এই ম্যাচে ১১ পরিবর্তন নিয়ে নামে দুই দল।
সিরিজ জয়ের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৩২১ রানে টার্গেটে দেয় পাকিস্তান। জবাবে ব্যাট করতে নেমে এইডেন মার্করামকে হারিয়ে প্রথম ধাক্কা খায় দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে আরেক ওপেনার জানেমান মালান সেই বিপর্যয় ঠেকানোর চেষ্টা করতে থাকেন। তবে অন্যপ্রান্ত থেকে সাহায্য না পাওয়ায় এই ওপেনারের প্রচেষ্টা খুব বেশি আশা জোগাতে পারেনি। দলীয় ১২৭ ৮১ বলে ৭০ করে যখন তিনি ফেরেন, ততক্ষণে তিন উইকেট হারিয়ে ব্যাকফুটে চলে গেছে স্বাগতিকরা।
দ্বিতীয় ম্যাচে নব্বই পার করা প্রোটিয়া অধিনায়ক টেম্বা বাভুমাও এদিন ব্যর্থ হয়েছেন। ব্যাট হাতে সফলতা পাননি মিডল অর্ডারের অন্য ব্যাটসম্যানরাও। ফলে ২৮ ওভারে ১৪০ তুলতেই পাঁচ উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। সেখান থেকে স্বাগতিকদের পরাজয়টা ভালোই আন্দাজ করা যাচ্ছিল। তবে মাত্র ৪ ওয়ানডে খেলা কাইল ভেরিনে পেসার ফেহলুকাকুকে নিয়ে অপ্রতিরোধ্য হয়ে দাঁড়ায় পাকিস্তানি বোলারদের সামনে।
এই দুইজনই তুলে নেন ফিফটি। বাড়তে থাকা রান রেটের সঙ্গে মানিয়ে রানের চাকাও সচল রাখছিল। তবে ৪৪তম ওভারে ভেরিনেকে হারিস রউফ ফেরালে বেঁচে থাকা আশাও নিভে যায় হুট করে। ৯৮ বলে ১০৮ রানের এই জুটি গড়েন এই দুজন। জুটি ভাঙার পরের ওভারেই ফেহলুকাকুও সাজঘরের পথ ধরেন। এরপর শুধু হারের ব্যবধানটাই কমাতে পেরেছে প্রোটিয়ারা। ইনিংসের ৩ বল বাকি থাকতে ২৯২ তে থামে তাঁরা। পাকিস্তানের হয়ে তিনটি করে উইকেট শিকার করেন শাহিন আফ্রিদি এবং মোহাম্মদ নেওয়াজ।
এর আগে টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে উড়ন্ত সূচনা করে পাকিস্তান। উদ্বোধনী জুটিতে শত রানের জুটি গড়েন দুই ওপেনার ইমাম উল হক আর ফখর জামান। তবে ৫৭ করে ফেরেন ইমাম। এরপর অধিনায়ক বাবর আজমকে নিয়ে বড় সংগ্রহের দিকে আগাতে থাকে পাকিস্তান। এমন শুরুর পর ধারণা করা হচ্ছিল, অন্তত সাড়ে তিনশ পার করবে তাঁরা।
এদিন টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি হাকিয়েছেন ফখর। ১০৪ বলে ৯টি চার ও ৩টি ছক্কায় ১০২ করে যখন আউট হন তখন পাকিস্তানের দলীয় সংগ্রহ দুইশ পার করেছে। আর ৮২ বলে ৭টি চার ও ৩ ছক্কায় ৯৪ রানের অধিনায়কোচিত ইনিংস খেলেন বাবর। পাকিস্তানি অধিনায়ক ফেরার পরেই ধ্বস নামে মিডল অর্ডারে। এক সময় মনে হচ্ছিল তিনশও পার করতে পারবে না দলটি।
যদিও শেষ দিকে হাসান আলীর ১১ বলে ৩২ রানের ঝড়ো ইনিংসে বেশ ভালোভাবেই তিনশ পার করে পাকিস্তান। ৪ ছক্কা আর ১ চারে এই পেসার অপরাজিত ছিলেন ইনিংসে শেষ পর্যন্ত। প্রোটিয়া পেসারদের ভিড়ে এদিন স্পিনাররাই রাজত্ব করেন। ৪৫ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেয়া কেশব মহারাজই ছিলেন দলের সেরা বোলার। এছাড়া ৪৮ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন পার্ট টাইম বোলার মার্করাম।