আলফ্রেদো দি স্তেফানো স্টেডিয়ামে শনিবার রাতে মৌসুমের দ্বিতীয় ক্লাসিকোয় ২-১ গোলে জিতেছে রিয়াল। করিম বেনজেমার গোলে স্বাগতিকরা এগিয়ে যাওয়ার পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন টনি ক্রুস। বার্সেলোনার একমাত্র গোলটি করেন অস্কার মিনগেসা।
প্রথমার্ধের আধা ঘণ্টা স্পর্শ করার আগেই ২-০ গোলের ব্যবধানে এগিয়ে যায় রিয়াল মাদ্রিদ। দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে কোণঠাসা করে ফেলে বার্সেলোনাকে। তবে ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়ায় বার্সা। তবে শেষ পর্যন্ত ম্যাচ বাঁচাতে পারেনি কাতালানরা। করিম বেনজেমা এবং টনি ক্রুসের গোলে ২-১ ব্যবধানে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে রিয়াল মাদ্রিদ। আর তাতেই বার্সেলোনা এবং অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদকে টপকে লা লিগার পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠে এসেছে লস ব্ল্যাঙ্কোসরা।
এবারের লা লিগায় দুটি ক্লাসিকোই জিতল মাদ্রিদের দলটি। গত অক্টোবরে কাম্প নউয়ে ৩-১ গোলে জিতেছিল তারা। ৪৩ বছর পর বার্সেলোনার বিপক্ষে টানা তিনটি ম্যাচ জিতল রিয়াল। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে এর আগে টানা তিনটি ম্যাচ তারা জিতেছিল ১৯৭৮ সালে, সেবার সবগুলোই লা লিগায়।
ঢিমেতালে শুরু ম্যাচে দশম মিনিটে ক্ষণিকের জন্য একটুখানি উত্তেজনা ছড়ায়। তবে লিওনেল মেসির দারুণ পাস ডি-বক্সে পেয়ে উল্লেখযোগ্য তেমন কিছু করতে পারেননি জর্দি আলবা।
এর তিন মিনিট পরেই উল্লাসে মাতে রিয়াল। একাদশে ফেরা ফেদেরিকো ভালভেরদে নিজেদের সীমানা থেকে বল পায়ে এগিয়ে ডান দিকে লুকাস ভাসকেসকে পাস দেন। স্প্যানিশ এই রাইট-ব্যাক খুঁজে নেন ছয় গজ বক্সের মুখে বেনজেমাকে। চমৎকার সাইড-ফুট ফ্লিকে কাছের পোস্ট দিয়ে বল জালে পাঠান ফরাসি ফরোয়ার্ড।
২৭তম মিনিটে ক্রুসের ফ্রি কিক ও কিছুটা সৌভাগ্যের ছোঁয়ায় ব্যবধান দ্বিগুণ করে রিয়াল। প্রতিপক্ষের দুর্বল রক্ষণের ভূমিকাও ছিল।
চার দিন আগে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে লিভারপুলের বিপক্ষে দলের ৩-১ ব্যবধানে জোড়া গোল করা ভিনিসিউস জুনিয়র শুরু থেকে ছিলেন ছন্দে। বাঁ দিক থেকে দারুণ ক্ষিপ্রতায় এগিয়ে যাওয়া ব্রাজিলিয়ান এই ফরোয়ার্ডই ফাউলের শিকার হলে ডি-বক্সের ঠিক বাইরে ফ্রি কিক পায় রিয়াল। ক্রুসের শটে বল ডিফেন্ডার সের্জিনো দেস্তের পিঠে লেগে দিক পাল্টে জালে জড়ায়। গোললাইনে বলের লাইনে ছিলেন আলবা, তিনিও পারেননি আটকাতে।
সাত মিনিট পর স্কোরলাইন হতে পারতো ৩-০। তবে ভিনিসিউসের দারুণ পাস পেয়ে ভালভেরদের জোরালো শট দূরের পোস্টে বাধা পায়। ফিরতি বলে ভাসকেসের শট ঝাঁপিয়ে ফেরান মার্ক-আন্ড্রে টের স্টেগেন।
বিরতির আগে যোগ করা সময়ে অসাধারণ এক গোল হতে পারতো। মেসির দারুণ কর্নারে বল সবাইকে ফাঁকি দিয়ে জালে জড়াতে যাচ্ছিল; তবে শেষ পর্যন্ত দূরের পোস্টে বাধা পায়।
প্রথমার্ধে বার্সেলোনা ৬৯ শতাংশ সময় বল দখলে রাখলেও প্রতিপক্ষকে তেমন চাপে ফেলতে পারেনি। তাদের ছয় শটের একটি মাত্র ছিল লক্ষ্যে। অন্যদিকে, রিয়ালের আট শটের তিনটি লক্ষ্যে।
প্রথমার্ধে শুরু হওয়া বৃষ্টি দ্বিতীয়ার্ধে নামে মুষলধারে। সঙ্গে ঝড়ো বাতাস। প্রতিকূল পরিবেশে ফুটবল তার স্বাভাবিক ছন্দ হারায়। তবে বার্সেলোনা ঠিকই তাদের বল দখলে রেখে আক্রমণে চাপ বাড়াতে থাকে।
৬০তম মিনিটে অবশেষে গোলের দেখা পায় তারা। বাঁ দিক থেকে আলবার ক্রস দুই পায়ের ফাঁক দিয়ে ছেড়ে দেন বদলি নামা অঁতোয়ান গ্রিজমান। আর ফাঁকায় বল পেয়ে ১০ গজ দূর থেকে ব্যবধান কমান প্রথম ক্লাসিকো খেলতে নামা তরুণ ডিফেন্ডার মিনগেসা।
৬২তম মিনিটে ভিনিসিউসের কোনাকুনি শট বাধা পায় পোস্টে। তিন মিনিট পর প্রতি-আক্রমণে দারুণ সম্ভাবনা জাগিয়ে আবারও হতাশ করেন তিনি। ডিফেন্ডারদের পেছনে ফেলে ডি-বক্সে গিয়ে শট না নিয়ে ডান দিকে দুর্বল পাস দিয়ে সুযোগ নষ্ট করেন তিনি। পরের মিনিটে ফাঁকায় বল পেয়ে লক্ষ্যভ্রষ্ট হেডে হতাশা বাড়ান ক্রুস।
এরপর দুই দলই গোল করার অনেক সুযোগ পেয়েছিল। ম্যাচের শেষ দিকে ব্রাথওয়েটের একটা পেনাল্টির আবেদন নাকচ করে দেন রেফারি, এরপর মার্সেলো নষ্ট করেন সহজ একটা সুযোগ। তার আগে কয়েক মিনিটের ব্যবধানে দুই হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছেড়েছেন কাসেমিরো। কিন্তু বৃষ্টিভেজা মাঠে কেউ আর গোলটা করতে পারেননি।
তথ্য সূত্রঃ বিডি নিউজ ২৪