Image default
খেলা

হৃদয় পড়ে থাকে বলেই তো বেঙ্গালুরু কোহলির ঘর

সাজানো সোনার সংসার। কিন্তু সংসার যে জন্য, সেই শান্তিটুকু মেলেনি। সাফল্য ধরা দেয়নি। তাই বলে সংসারের কর্তা কিন্তু হাল ছাড়েননি। সংসার আগলে রেখে নেমেছেন জীবনযুদ্ধে, হয়তো একদিন সাফল্য ধরা দেবে, কে জানে!

বাংলা সিনেমার নিম্নবিত্ত কোনো পরিবারের সাজানো সংসারের চিত্রনাট্যের মতো লাগছে? তা লাগুক, তবে ‘নিম্নবিত্ত’ কথাটা ছেঁটে ফেললে এই চিত্রনাট্য কিন্তু বিরাট কোহলি ও রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুরও।

ভ্রুকুটির আগে পুরোটা শুনুন। বেঙ্গালুরুর বিত্ত কিংবা চিত্ত—কোনোকিছুর অভাব নেই। দলটি আইপিএলে মাঠে যেমন লড়ে, মাঠের বাইরে তেমনি চুটিয়ে মজাও করে। অভাব শুধু সাফল্যের—শিরোপা! আইপিএলের ইতিহাসে বেঙ্গালুরুর এখনো শিরোপাশূন্য থাকা বোধ হয় সবচেয়ে বড় ধাঁধাগুলোর একটি। ফ্র্যাঞ্চাইজি দলটিতে তারকার অভাব ছিল না কখনো, ফাইনালেও উঠেছে তিনবার—কিন্তু প্রতিবারই এই শেষ বাধার চিত্রনাট্যে ‘ট্র্যাজেডি’ লিখেছে বেঙ্গালুরু।

এভাবে আর কত দিন চলে! যেকোনো খেলোয়াড় এমন ভাবতেই পারেন। যে দল সাফল্যের দেখা পায় না, শিরোপা জিততে পারে না, সেই দলটি যত শক্তিশালীই হোক, দিন শেষে তো সাফল্যের ঝুড়িতে কিছু মেলে না। তাই বেঙ্গালুরু ছেড়ে গেছেন অনেক তারকাই। দলবদল করে হয়তো সাফল্যের দেখাও পেয়েছেন। কিন্তু কোহলি এ ক্ষেত্রে একেবারে আলাদা।

বেঙ্গালুরু তাঁর কাছে ‘ঘর’ যেখানে ‘হৃদয়টা থাকে’—ওই তো, এক অর্থে সংসারই! কিংবা বেঙ্গালুরু যেভাবে টুইটারে কথাটি পোস্ট করেছে, সেভাবেও বলা যায়, হৃদয় যেখানে পড়ে থাকে সেটাই তো ঘর!

২০১৩ সাল থেকে কোহলি বেঙ্গালুরুর এই সংসারের কর্তা—মানে অধিনায়ক। আইপিএলের শুরু থেকেই এই ফ্র্যাঞ্চাইজি দলে খেলছেন বর্তমানে ভারত জাতীয় দলের অধিনায়ক। পরিণত হওয়ার সঙ্গে দায়িত্বও তুলে নিয়েছেন। সাফল্য এনে দিতে না পারায় পেয়েছেন ‘(কু)মন্ত্রণাও’—বেঙ্গালুরু ছেড়ে অন্য কোথাও যোগ দাও!

কিন্তু ওই যে বলা হলো, কোহলি অন্য ধাতে গড়া মানুষ—কোনো দলকে একবার বুক দিলে পিঠ দেখিয়ে চম্পট দিতে পারেন না। অনেকটাই ব্যাট হাতে তাঁর বিরুদ্ধস্রোতে লড়াই করে যাওয়ার মতো। কাল যেমন আইপিএলে নতুন মৌসুমে প্রথম ম্যাচে মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের বিপক্ষে বেঙ্গালুরুর ২ উইকেটের জয়ে ৩৩ রানের গুরুত্বপূর্ণ এক ইনিংস খেলেন কোহলি।

বেঙ্গালুরুর বিশাল ভক্তগোষ্ঠী, ফ্র্যাঞ্চাইজিটির আলাদা ধাঁচের ক্রিকেটে মন সঁপেছেন কোহলি। এই ১৩ বছরে তাই কোহলির মাথায় কখনো বেঙ্গালুরু ছাড়ার ভাবনা কাজ করেনি।

ফ্র্যাঞ্চাইজিটির টুইটারে এক ভিডিও বার্তায় অধিনায়ক বলেন, ‘অন্য কিছু দলেরও বিশাল ভক্তগোষ্ঠী আছে। তবে আমি মনে করি নির্দিষ্ট এক ধাঁচের ক্রিকেট খেলার জন্য আমরা যেখানেই খেলি না কেন, প্রচুর সমর্থন পেয়ে থাকি। আমরা হৃদয় দিয়ে খেলি, হ্যাঁ, শেষটা হয়তো ভালো হয় না কিন্তু নিবেদন, একাত্মতা ও চেষ্টার অভাব ছিল না কখনোই।’

বেঙ্গালুরুর সঙ্গে নিজের প্রাণ বেঁধে ফেলার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে কোহলি যোগ করলেন, ‘শিরোপা জিততে না পারায় চলে যাব এটা কখনো ভাবিনি। বিষয়টি এমন নয় যে লোকে জোর করে এখানে খেলাচ্ছে আমাকে, কিংবা এমনও নয় যে আমাকে রেখে দেওয়ার কথা বলেছি ম্যানেজমেন্টকে। কখনো এমন আলোচনা হয়নি। এখানে সবকিছু খুবই স্বাভাবিক। যে সম্মান ও ভালোবাসা আমি এখানে পাই, তা অন্য কোথাও তৈরি করতে পারব বলে মনে হয় না। এই অভিজ্ঞতা জাদুকরি।’

এই ঘরের প্রতি কোহলির এমন টান দেখে তাঁর বলিউড অভিনেত্রী স্ত্রী আনুশকা শর্মার কি একটু হিংসে হয়? হয়তো নয়!

 

Related posts

‘মানকাড’ আউট খেলারই অংশ: হারমানপ্রীত

News Desk

পেলের রেকর্ড ভাঙতে নেইমারের লাগবে মাত্র ৯ গোল

News Desk

ররি ম্যাকিলরয়ের বিবাহবিচ্ছেদ, পিজিএ চ্যাম্পিয়নশিপ চলার সাথে সাথে এলআইভি নাটক গল্ফ-এ পিছিয়ে যায়

News Desk

Leave a Comment