Image default
খেলা

ভারতীয় সেনাবাহিনীর নতুন চাকরির প্রকল্প ঘিরে বিভিন্ন রাজ্যে বিক্ষোভ

ভারতের সেনাবাহিনীতে নিয়োগসংক্রান্ত ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্পের ঘোষণা দিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। গতকাল বুধবার এই ঘোষণা দেওয়া হয়। মন্ত্রণালয়ের ঘোষণার পর ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।

ভারতের যেসব রাজ্য থেকে বিপুলসংখ্যক তরুণ সেনাবাহিনীর নিচের দিকের কর্মী হিসেবে যোগ দেন, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম বিহার, উত্তর প্রদেশ ও হরিয়ানা। এই তিন রাজ্যে প্রকল্পের বিরোধিতায় বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। বিক্ষোভের তীব্রতা সবচেয়ে বেশি বিহারে।

বুধবার ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অগ্নিপথ প্রকল্পে ১৭ থেকে ২১ বছর বয়সের তরুণেরা চার বছরের জন্য সেনা, বিমান ও নৌবাহিনীতে চাকরি পাবেন।

তাঁদের মূলত প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এই সময় তাঁদের প্রতি মাসে ৩০ থেকে ৪০ হাজার রুপি বেতন এবং চার বছর পরে ১১ থেকে ১২ লাখ রুপি এককালীন অর্থ দেওয়া হবে। কিন্তু ২৫ শতাংশের বেশি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত তরুণের চাকরি স্থায়ী করা হবে না।

এই ঘোষণার বিরোধিতা করে আরা, নওয়াদা, সহর্সা, জেহানাবাদসহ বিহারের বিভিন্ন জেলায় তরুণেরা রাস্তা আটকে ট্রেন ও বাস ভাঙচুর করেছেন। পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়া হয়েছে। বিহারের রাজধানী পাটনার স্কুলশিক্ষক সুধীর যাদব প্রথম আলোকে বলেন, বিহারের তরুণদের কাছে সেনাবাহিনীর চাকরি সবচেয়ে আকর্ষণীয়। কারণ, বিহারের মতো দরিদ্র রাজ্যে অন্যান্য চাকরির সুযোগ কম।

এদিকে উত্তর প্রদেশ ও হরিয়ানার অনেক জেলাতেও আজ বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। বিক্ষোভ আরও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছে স্থানীয় প্রশাসন। সুধীর যাদব বলেন, সেনাবাহিনীতে চাকরির প্রধান সুবিধাগুলোর মধ্যে রয়েছে স্থায়ী চাকরির সুযোগ। সেই সুবিধার নিশ্চয়তা আর থাকছে না। এটাই প্রতিবাদের প্রধান কারণ।

এ ছাড়া প্রকল্প ঘোষণায় বলা হয়েছে, এই অস্থায়ী চাকরির মাধ্যমে ‘নিয়মিত ক্যাডার সেবায় অন্তর্ভুক্তির জন্য আবেদনের সুযোগ’ থাকছে। ভারতের সেনাবাহিনীর পর্যবেক্ষক ও একাধিক অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মূলত এই বিষয়টি নিয়েই আপত্তি তুলেছেন। তাঁদের বক্তব্য, চার বছর পরে অর্ধশিক্ষিত অবস্থায় আগ্নেয়াস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ নিয়ে এই তরুণেরা বের হবেন। তখন তাঁরা কোথায় যাবেন?

এরই মধ্যে একাধিক পর্যবেক্ষক বলেছেন, ভবিষ্যতে সেনাবাহিনীতে স্থায়ীভাবে নিয়োগ না পাওয়া তরুণদের স্থান হবে হিন্দু জাতীয়তাবাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ বা অনুগামী অন্যান্য হিন্দুত্ববাদী সংগঠনে। রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ বরাবরই ক্যাডারদের ও সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষকে অস্ত্র, বিশেষ করে আগ্নেয়াস্ত্রের প্রশিক্ষণের ওপর জোর দিয়ে আসছে।

প্রকল্পের সমালোচকদের বক্তব্য, তৎকালীন নাৎসি জার্মানিতে ‘ব্রাউন শার্টস’ বলে যে সামাজিক আধাসামরিক বাহিনী তৈরি করা হয়েছিল, অগ্নিপথ প্রকল্পের মাধ্যমে বিজেপি সরকার সেটাই করতে চাইছে। এই প্রকল্প ভারতকে একটি সামরিক সমাজে পরিণত করবে, যা কাম্য নয়। ভারতীয় সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত অনেক কর্মকর্তাও অগ্নিপথ সম্পর্কে একই মন্তব্য করেছেন।

Related posts

সোনা জিতিয়ে ব্রাজিল দলে ফিরলেন দানি আলভেস

News Desk

আইওয়া দীর্ঘ ক্যারিয়ারের পর ক্যাটলিন ক্লার্কের 22 নং অবসর নিচ্ছেন

News Desk

এনজোকে ধন্যবাদ জানিয়ে যা বললেন মেসি

News Desk

Leave a Comment