Image default
খেলা

মঈন–ঝড়ে কোয়ালিফায়ারে ইমরুলরা, ঝুলে থাকল মুশফিকের খুলনা

প্রথমে ঝড় তুললেন লিটন দাস। এরপর খুলনার বোলাররা পড়লেন মঈন আলীর কবলে। লিটনের ১৭ বলে ৪১ রানের পর মঈন খেললেন ৩৫ বলে ৭৫ রানের বিধ্বংসী ইনিংস, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস তাতেই পেয়ে গেল ১৮৮ রানের সংগ্রহ। রান তাড়ায় প্রথম ওভারের পর থেকেই খেই হারাল খুলনা টাইগার্স, হারল ৬৫ রানের বড় ব্যবধানে। বিপিএলের এ মৌসুমে রানের হিসাবে সবচেয়ে বড় জয় এটিই।

এ জয়ে ফরচুন বরিশালের সঙ্গে প্রথম কোয়ালিফায়ার খেলা নিশ্চিত হলো আপাতত টেবিলের শীর্ষে থাকা কুমিল্লার। অন্যদিকে প্লে-অফে যেতে হলে আগামীকাল কুমিল্লার বিপক্ষেই ম্যাচটা প্রায় বাঁচা-মরার হয়ে যেতে পারে খুলনার, যদি চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স তাদের ম্যাচটা জেতে।

ঢাকায় এর আগে দিনের ম্যাচগুলোতে সেভাবে বড় রানের দেখা মেলেনি। তবে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামা কুমিল্লার হয়ে লিটন ঝড় শুরু করেন দ্বিতীয় ওভারে, বাঁহাতি স্পিনার নাবিল সামাদের ওপর চড়াও হয়ে। সে ওভারে ১৬ রানের পর খালেদ আহমেদের ওভারে ওঠে আরও ১৯ রান।

লিটনের ঝড়ের দর্শক হয়ে থাকা মাহমুদুল হাসানকে ফিরিয়ে খুলনাকে প্রথম ব্রেকথ্রু এনে দেন নাবিলই। তবে পাওয়ারপ্লেতে কুমিল্লা ঠিকই ৫২ রান তোলে। লিটন অবশ্য অর্ধশতক পাননি শেষ পর্যন্ত, থিসারা পেরেরার অফ স্টাম্পের বাইরের বলে আলগা শটে ক্যাচ তুলে ফিরেছেন। এর আগে দুই দফা জীবনও পান এই ডানহাতি—২১ রানে মুশফিক মোটামুটি কঠিন ক্যাচটা নিতে পারেননি, ৩৪ রানে সহজ ক্যাচ ফেলেন খালেদ।

লিটনের পর ইমরুলও ফেরেন দ্রুত, সে সময়টায় কুমিল্লার রানের গতি বেশ খানিকটা কমিয়ে আনতে পেরেছিল খুলনা। পাওয়ারপ্লের পর ৬ ওভারে ওঠে মাত্র ২৯ রান, দুই বাউন্ডারির বিনিময়ে ২ উইকেট তুলে নেয় খুলনা। তবে ১৩তম ওভারে মেহেদী হাসানের ওপর চড়াও হন মঈন, ম্যাচের হাওয়াও দিক পাল্টায় কুমিল্লার দিকে। কাউ কর্নার, লং অন ও মিড উইকেটের ওপর দিয়ে মেহেদীকে সে ওভারে তিন ছক্কা মারেন মঈন, ওঠে ২০ রান।

মুশফিক এরপর সৌম্য সরকার, খালেদের সঙ্গে আনেন থিসারা পেরেরাকেও, তবে মঈনকে থামাতে পারেননি। অন্যদিকে ফাফ ডু প্লেসি অবশ্য স্ট্রাইক বদলানোর দিকেই মনোযোগী ছিলেন, কাজ করছিলেন মঈনের সহকারী হিসেবেই। ১৭তম ওভারে সৌম্যকে টানা দুই ছক্কা মারার পথে অর্ধশতক পেয়ে যান মঈন, মাত্র ২৩ বলে। সে ওভারেই একটা ছয় মারার পরপরই কাভারে ইয়াসির আলীর হাতে ধরা পড়েন ডু প্লেসি, করেন ৩৬ বলে ৩৮ রান। এর আগে মঈনের সঙ্গে তাঁর জুটিতে ওঠে ৪৬ বলে ৮৩ রান।

১৯তম ওভারে থামেন মঈন, পেরেরার বলে ক্যাচ দিয়ে। ইনিংসে ১টি চারের সঙ্গে এই ডানহাতি মারেন ৯টি ছয়। বিপিএলে এর আগে ইনিংসে চার-ছক্কার এমন বৈপরীত্য শুধু একজনই দেখিয়েছেন—নিকোলাস পুরান। ২০১৯ সালে সিলেট সিক্সার্সের হয়ে ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষে ৪৭ বলে ৭২ রানের ইনিংস খেলার পথে ১টি চারের সঙ্গে ৯টি ছয় মেরেছিলেন। মঈন ফিরলেও শেষ ওভারে ওঠে ১৪ রান, শেষ ৫ ওভারে কুমিল্লা তোলে ৬৭ রান।

রান তাড়ায় প্রথম ওভারে তখন পর্যন্ত টুর্নামেন্টে পাওয়ারপ্লের সফলতম বোলার নাহিদুল ইসলামের ওপর চড়াও হন আন্দ্রে ফ্লেচার, তোলেন ১৬ রান। কুমিল্লা অধিনায়ক ইমরুল যেন জরুরি ভিত্তিতেই ডেকে পাঠান মোস্তাফিজুর রহমানকে। নিজের প্রথম ওভারে জোড়া আঘাতে খুলনাকে ব্যাকফুটে ঠেলে দেন বাঁহাতি পেসার। পরপর দুই বলে ফেরান রনি তালুকদার ও ফ্লেচারকে—রনি মিড অনে ক্যাচ দেন ইমরুলের হাতে, কুমিল্লার নেওয়া এডিআরএসে এলবিডব্লু হন ফ্লেচার।

মোস্তাফিজের সে ওভারের পর পাওয়ারপ্লেতে আর মাত্র একটি বাউন্ডারি মারতে পেরেছে খুলনা। পরপর দুই ওভারে ইয়াসির আলী ও মুশফিকুর রহিম ফিরলে তাদের চাপ বাড়ে আরও। মঈনের বলে ক্যাচ তোলেন ১৯ বলে ১৮ রান করা ইয়াসির, আর মুশফিকুর ৪ বল খেলে ০ রানেই ফেরেন আবু হায়দারের বলে। খুলনা এরপর সেভাবে জুটি গড়তে পারেনি, প্রয়োজনীয় রান-রেটও শুধু দূরেই সরে গেছে তাঁদের কাছ থেকে।

সিকান্দার রাজা, সৌম্য সরকার বা মেহেদী হাসান—কেউ পরিস্থিতির চাহিদা মেটাতে পারেননি। ২টি ছয় মারলেও ২৩ বলে ২৬ রানের বেশি করতে পারেননি থিসারা পেরেরাও। প্রথম ওভারের দুঃস্বপ্ন ভুলে দারুণভাবে ফিরে এসেছেন অফ স্পিনার নাহিদুল, শেষ পর্যন্ত ৪ ওভারে ২৮ রান দিয়ে নিয়েছেন ২ উইকেট। মাঝের ওভারগুলোতে দারুণ ছিলেন বাঁহাতি পেসার আবু হায়দার, ৪ ওভারে মাত্র ১৯ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়েছেন তিনি। ২ উইকেট নিয়েছেন মঈনও। খুলনা লম্বা ব্যাটিং লাইনআপ তাই মুখ থুবড়ে পড়েছে ইনিংসের ৩ বল বাকি থাকতেই।

Related posts

পিটার ল্যাভিওলেটের গঠন এবং ইতিবাচকতা রেঞ্জার্সের জন্য ‘পারফেক্ট ম্যাচ’

News Desk

'স্ট্রাইকরেট নিয়ে চিন্তা করিনি'

News Desk

ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন কৃষ্ণা

News Desk

Leave a Comment