এক বছরে ৩০০ কোটি টাকা আয় কমে গেল অ্যাপলের সিইও টিম কুকের। ২০২২ সালে তিনি যে পরিমাণ বেতন পেয়েছিলেন তার চেয়ে ২০২৩ সালে ৩০০ কোটি টাকা কম আয় করেছেন। ইউএস সিকিউরিটিজ় এক্সচেঞ্জ কমিশনকে অ্যাপলের তরফে জানানো হয়েছে যে ২০২৩ সালে টিম প্রায় ৫২৪ কোটি টাকা আয় করেছেন। সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে যে ২০২৩ সালে শুধুমাত্র বেতন হিসাবে ২৫ কোটি টাকা পেয়েছেন টিম।
২০২১ এবং ২০২২ সালেও পারিশ্রমিক হিসাবে ২৫ কোটি টাকা পেয়েছিলেন টিম। এমনটাই জানিয়েছে অ্যাপল। অ্যাপল সূত্রে খবর, শেয়ার বাজার থেকে ২০২৩ সালে প্রায় ৩৯০ কোটি টাকা আয় করেছেন টিম কুক। সংস্থার লভ্যাংশ হিসাবে প্রায় ৮৯ কোটি টাকা রোজগার করেছেন টিম। এ ছাড়াও ভাতা বাবদ ২০২৩ সালে আরও প্রায় ২১ কোটি টাকা উপার্জন করেছেন তিনি।
অ্যাপল সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে যে, ২০২৩ সালে টিমের মোট আয় ৫২৩ কোটি টাকা। এক বছর আগে এর চেয়ে ৩০০ কোটি টাকা বেশি আয় করেছিলেন তিনি। সংস্থা সূত্রে খবর, ২০২২ সালে টিমের মোট আয় ছিল ৮২৩ কোটি ৯১ লক্ষ টাকা।
ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সালে নিজের বেতনের ৪০ শতাংশ কাটছাঁট করার প্রস্তাব করেছিলেন টিম। কিন্তু এমন সিদ্ধান্ত কেন নিয়েছিলেন তিনি? বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কুক নাকি মনে করেছিলেন যে তাঁর বেতন ‘অত্যন্ত বেশি’। সে কারণেই কাটছাঁট করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন তিনি।
কোনও সংস্থার সিইও নিজের বেতনের ৪০ শতাংশ ছেঁটে ফেলতে চাইছেন, এমন ঘটনা খুবই বিরল। তালিকাও খুব সংক্ষিপ্ত। আর সেই তালিকায় নতুন সংযোজন কুক। ৪০ শতাংশ কাটছাঁট করে তাঁর বেতন ৪ কোটি ৯০ লক্ষ ডলার করার জন্য সংস্থার কাছে প্রস্তাব রেখেছিলেন টিম। তার মধ্যে বেসিক বেতন ৩০ লক্ষ ডলার, ৬০ লক্ষ ডলার বোনাস এবং শেয়ার মূল্য ৪ কোটি ডলার।
আইফোন প্রস্তুতকারী সংস্থা একটি রেগুলেটরি ফাইলিংয়ে জানিয়েছে, অ্যাপলের পারফরম্যান্সের সঙ্গে জড়িত যে সব স্টক ইউনিট রয়েছে, তা ২০২৩ সালে ৫০ শতাংশ থেকে বেড়ে ৭৫ শতাংশ হয়েছে। অ্যাপল সংস্থার শেয়ারহোল্ডারদের মতামত, সংস্থার পারফরম্যান্স এবং টিম নিজে যে পরিমাণ বেতন কাটছাঁটের অনুরোধ করেছিলেন তার সব কিছু একত্রিত করে তবেই কুকের নতুন বেতন স্থির করা হয়েছিল।
বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ সালে টিমের বিপুল বেতন নিয়ে শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছিল। শেয়ারহোল্ডার অ্যাডভাইসরি গ্রুপ ইনস্টিটিউশনাল শেয়ারহোল্ডার সার্ভিসেস (আইএসএস) টিমের বেতন নিয়ে ‘উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছিল। অভিযোগ তোলা হয়েছিল, টিম যে বেতন পান তার অর্ধেকটাই তাঁর পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে নয়। ওই সংস্থার বার্ষিক বৈঠকে টিমের বেতনের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অধিকাংশ শেয়ারহোল্ডার টিমের পক্ষেই ভোট দিয়েছিলেন। ২০২১ সাল থেকে তাই টিমের বেতনের উপর কোনও প্রভাব পড়েনি।
তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার