ওয়েবসাইট থেকে গুগলের বিজ্ঞাপন সরিয়ে নেওয়ায় গুগলের সার্চইঞ্জিনে অনুসন্ধানের ফলাফলে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনেছে বৃটেনের ডেইলি মেইল। এ নিয়ে গুগলের বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করেছে ডেইলি মেইল ও পত্রিকার অনলাইন ওয়েবসাইট মেইলঅনলাইন-এর মালিক প্রতিষ্ঠান এসোসিয়েটেড নিউজপেপার্স। তাদের অভিযোগ, গুগলের কাছে পর্যাপ্ত বিজ্ঞাপন বিক্রি না করায় তাদের প্রতিবেদনগুলোর লিংক অনুসন্ধান ফলাফলে ব্যবহারকারীদের সামনে আনে না সার্চ ইঞ্জিনটি। বরং, এক্ষেত্রে অন্যান্য গণমাধ্যম প্রতিবেদনগুলোকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে। তবে গুগল এ অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে আখ্যা দিয়েছে। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।
খবরে বলা হয়, গুগল সার্চ ইঞ্জিনের ফলাফলে বৃটিশ রাজপরিবার সংক্রান্ত ডেইলি মেইলের বিভিন্ন খবরের অবস্থানে কারচুপি দেখছে পত্রিকাটি। উদাহরণস্বরূপ, প্রতিষ্ঠানটির দাবি, অপরাহ উইনফ্রের সঙ্গে ডাচেস অব সাসেক্সের সাক্ষাৎকারের পর মেগানকে নিয়ে পিয়ার্স মরগ্যানের মন্তব্য গুগলে অনুসন্ধান করলে ছোট ও আঞ্চলিক গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন আগে দেখতে পায় বৃটিশ ব্যবহারকারীরা। অথচ, একই সময়ে ডেইলি মেইলও মরগ্যানের মন্তব্য নিয়ে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল।
শুধু তাই নয়, তাকে কলামিস্ট হিসেবেও নিয়োগ দিয়েছিল। তা সত্ত্বেও তাদের প্রতিবেদনগুলো গুগল অনুসন্ধান ফলাফলের উপরের দিকে দেখা যায়নি। ডেইলি মেইলের সম্পাদক পিটার রাইট বিবিসি’র টুডে অনুষ্ঠানে বলেছেন, গুগলের এসব কর্মকাণ্ড ‘প্রতিযোগিতা-বিরোধী’। তিনি জানান, অনলাইন বিজ্ঞাপন নিয়ে নতুন একটি কৌশল অবলম্বনের পরই গুগলের অনুসন্ধানে ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনগুলো দৃষ্টিগোচরতা হারায়। রাইট জানান, নতুন কৌশল অবলম্বন করে গুগলের বদলে অন্যান্য বিজ্ঞাপন বিনিময় সংস্থার শরণাপন্ন হয় ডেইলি মেইল। সংস্থাগুলো গুগলের তুলনায় আরো বেশি দামে বিজ্ঞাপন কিনে নেয়। রাইট ইঙ্গিত দেন, বিজ্ঞাপন সরিয়ে নেওয়ার শাস্তি হিসেবেই গুগল তাদের শাস্তি দিচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা মনে করি এখন সময় এসেছে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার। মামলায় উল্লেখিত তথ্য অনুসারে, মেইলঅনলাইন বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে পঠিত ওয়েবসাইটগুলোর একটি। প্রতি মাসে গড়ে কেবল যুক্তরাষ্ট্র থেকেই ৭ কোটি ৫০ লাখের বেশি ব্যবহারকারী সাইটটিতে প্রবেশ করেন।
এসোসিয়েটেড নিউজপেপার্সের অভিযোগগুলো প্রত্যাখ্যান করেছে গুগল।
প্রতিষ্ঠানটির এক মুখপাত্র বলেন, ডেইলি মেইলের দাবিগুলো সম্পূর্ণরুপে অসত্য। কোনো প্রকাশনার ওয়েবসাইট গুগলের অনুসন্ধান ফলাফলে কোন অবস্থানে থাকবে, তার উপর আমাদের বিজ্ঞাপন বিষয়ক প্রযুক্তিগুলো ব্যবহারের কোনো প্রভাব নেই। ওই মুখপাত্র আরো বলেন, গড়পড়তাভাবে বললে, আমরা খুবই হাড্ডাহাড্ডি একটি বিজ্ঞাপন প্রযুক্তির বাজারে প্রতিযোগিতা করছি। সংবাদ প্রকাশকরা চাইলেই অন্যান্য বিজ্ঞাপন প্রযুক্তি কোম্পানির আশ্রয় নিতে পারেন। ডেইলি মেইলও কয়েক ডজন বিজ্ঞাপন প্রযুক্তি বিষয়ক সংস্থাকে তাদের বিজ্ঞাপন বিক্রি ও সামলানোর অনুমোদন দিয়ে রেখেছে। সেসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অ্যামাজন, ভেরাইজন ও অন্যান্যরা রয়েছে। অতএব, আমরা আমাদের বিরুদ্ধে এসব ভিত্তিহীন দাবির বিরুদ্ধে লড়াই করবো। এদিকে, ভিন্ন এক ঘটনায় গুগলের বিরুদ্ধে আস্থাভঙ্গের মামলা দায়ের করেছে যুক্তরাষ্ট্রের আইন মন্ত্রণালয় ও কয়েকটি রাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেলরা।