মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসার Perseverance rover প্রতিদিন ইতিহাস তৈরী করার লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে।নাসা জানিয়েছে যে, ছয় চাকাযুক্ত রোভারটি মঙ্গল গ্রহের বায়ুমণ্ডল থেকে কিছুটা কার্বন ডাই অক্সাইড নিয়ে অক্সিজেনে রূপান্তরিত করেছে।মহাকাশ সংস্থা জানিয়েছে যে, এই প্রথমবার পৃথিবীর বাইরে অন্য কোনও গ্রহে এই কাজ করা সম্ভব হয়েছে।এরফলে মঙ্গলগ্রহে বসবাস আর দূরে নয়। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে পৃথিবীর মতো এবার লাল গ্রহেও শ্বাস নিতে পারবে মানুষ।
নাসার মহাকাশ প্রযুক্তি মিশনের প্রধান জিম রিটার বলেছেন যে, মঙ্গল গ্রহে কার্বন-ডাই-অক্সাইডকে অক্সিজেনে রূপান্তরিত করার বিষয়টি লাল গ্রহে বসবাসের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।রোভার ২০ এপ্রিল এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে।আশা করা হচ্ছে যে, এর ফলে ভবিষ্যতে মঙ্গল গ্রহে মানুষের বসবাসের পথ উন্মুক্ত হবে।এই প্রযুক্তির মাধ্যমে ভবিষ্যতে নভোচারীদের শ্বাস নেওয়ার জন্য অক্সিজেন সরবরাহ করা যেতে পারে।
‘মার্স অক্সিজেন ইন সিটু রিসোর্স ইউটিলাইজেশন এক্সপেরিমেন্ট’ বা MOXIE একটি ব্যাটারি চালিত গাড়ি।দেখতে সোনালি বাক্সের মতন। এই বাক্সটি রোভারের ডানদিকে রয়েছে।এটিকে নাসা ‘যান্ত্রিক গাছ’ হিসাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।এটি বিদ্যুৎ এবং রাসায়নিক প্রয়োগের মাধ্যমে কার্বন ডাই অক্সাইডের অণুকে পৃথক করতে পারে। কার্বন ডাই অক্সাইড যা, একটি কার্বন পরমাণু এবং দুটি অক্সিজেন পরমাণু দিয়ে গঠিত। তবে বাই-প্রোডাক্ট হিসাবে এটি কার্বন মনোক্সাইডও উৎপাদন করে।
MOXIE প্রথমবার পাঁচ গ্রাম অক্সিজেন প্রস্তুত করে।নভোচারীরা সাধারণ ক্রিয়াকলাপ করার সময় এই অক্সিজেনের সাহায্যে ১০ মিনিটের জন্য শ্বাস-প্রশ্বাস চালাতে পারবে। এই ডিভাইসের সাহায্যে ইঞ্জিনিয়াররা এখন আরও বেশি পরিমাণে অক্সিজেন তৈরির জন্য কাজ শুরু করেছেন।এই যন্ত্রটি প্রতি ঘন্টায় ১০ গ্রাম অক্সিজেন উৎপাদন করতে সক্ষম।ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি এই যন্ত্রটি তৈরী করেছে। এই বিশেষ যন্ত্রটি তৈরী করতে তাপ প্রতিরোধী উপকরণ যেমন নিকেল আলয়ের মত ধাতু ব্যবহার করা হয়েছে। MOXIE তাপমাত্রা ১৪৭০ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপ সহ্য করতে পারে।
বর্তমানে বেশ কয়েকটি দেশ এবং কর্পোরেট সংস্থা এবং ব্যক্তি মালিকানাধীন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা লাল গ্রহে বাসস্থান তৈরির প্রতিযোগিতায় নেমেছে। তবে এই গ্রহের পরিবেশ প্রাণধারণের পক্ষে অনুকূল নয়।তবে ব্রেমেন বিশ্ববিদ্যাল-এর গবেষকরা সম্প্রতি ইবেইন ম্যাগাজিন ডট কমে প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে দাবি করেছেন, তাঁরা এমন এক পদ্ধতি তৈরি করেছেন, যা মঙ্গলে মঙ্গলে প্রাণ ধারণের অনুকূল পরিস্থিতি তৈরী করতে পারে।