চীনের রোভার ‘ঝুরং’ মঙ্গল গ্রহের প্রথম যে ছবিগুলো তুলেছে সেগুলো প্রকাশ করেছে দেশটি। রোভার থেকে তোলা ছবিতে উপরের অংশে দেখা যাচ্ছে মঙ্গলের পৃষ্ঠ আর নিচে রয়েছে ঝুরং-এর সৌর প্যানেলগুলো। রোভার যে প্ল্যাটফর্মের ওপর অবতরণ করেছে, সেখান থেকেই রোবট এই ছবি তুলেছে।
বেইজিংয়ের স্থানীয় সময় রবিবার সকালে রোভারটি মঙ্গলের মাটিতে অবতরণ করে। মহাকাশ অভিযানের ক্ষেত্রে আমেরিকার পর চীন দ্বিতীয় দেশ যারা মঙ্গল গ্রহে সফলভাবে রোভার নামাতে এবং মঙ্গলের পৃষ্ঠে রোভারটিকে উল্লেখযোগ্য সময় ধরে কাজ করাতে সক্ষম হয়েছে।
চীনা বিজ্ঞানীরা আশা করছেন ছয় চাকার এই রোভারটি লাল গ্রহটির ইউটোপিয়া প্লানিটিয়া অঞ্চলে অন্তত ৯০ মঙ্গল দিবস ধরে তার কাজ চালিয়ে যেতে পারবে। মঙ্গল গ্রহের উত্তর দিকে বিস্তীর্ণ এলাকাটির নাম ইউটোপিয়া প্লানিটিয়া।
চীনের জাতীয় মহাকাশ প্রশাসন (সিএনএসএ) তাদের ওয়েবসাইটে এই ছবিগুলো পোস্ট করেছে।
তাদের ওয়েবসাইটে দুটি ছোট ভিডিও-ও পোস্ট করা হয়েছে যেখানে দেখা যাচ্ছে, রোভারের বাইরের খোলস বা ক্যাপসুল যখন মূল মহাকাশযান তিয়ানওয়েন-১ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় সেই মুহূর্তটি।
রোভার রোবটটি মঙ্গল গ্রহে নিয়ে যায় তিয়ানওয়েন-১, যেটি মঙ্গলের কক্ষপথ প্রদক্ষিণ করছে। একটি বাতাসে ভরা ক্যাপসুল ব্যবহার করে ঝুরং রোভার মঙ্গল গ্রহের বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে।
মঙ্গলের বুক থেকে যেসব ছবি ঝুরং তুলেছে তার থেকে এটা পরিষ্কার যে অবতরণের পর রোভারটি তার গুরুত্বপূর্ণ যান্ত্রিক সরঞ্জামগুলো সুশৃঙ্খলভাবে এবং ঠিকমত নির্ধারিত জায়গাগুলোতে বসাতে পেরেছে।
এর মধ্যে রয়েছে সৌর প্যানেলগুলো ঠিকমত খুলতে পারা, যে প্যানেলগুলো রোবটটির কাজ করার জন্য সৌরশক্তি সরবরাহ করবে, রয়েছে মূল যান তিয়ানওয়েন-১ এবং চীনের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য অ্যান্টেনা চালু করা এবং রোবট থেকে একটি পাটাতন নামানো যে পাটাতন বেয়ে কিছুদিনের মধ্যে ঝুরং নিচে নামবে এবং চলাচল করে ছবি ও তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু করবে।
ঝুরং-এর ওজন ২৪০ কেজি। এই রোবটে উঁচু মাস্তুলের মাথায় ছবি তোলার জন্য একটি ক্যামেরা বসানো রয়েছে এবং রয়েছে দিক নির্দেশনার সরঞ্জাম। এতে আরও বাড়তি যে পাঁচটি যন্ত্র রয়েছে তা দিয়ে মঙ্গলের খনিজ পরীক্ষা করা হবে, পরিবেশের সাধারণ প্রকৃতি এবং আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করা হবে।