Image default
প্রযুক্তি

সূর্য ও নক্ষত্রজগতের রহস্য উন্মোচনের প্রচেষ্টা

খালি চোখে আমরা প্রায় ৬,০০০ তারা দেখতে পারি৷ বিশাল দূরত্বের কারণে সেগুলি দেখতে ক্ষুদ্র বিন্দুর মতো৷ বাস্তবে নক্ষত্রগুলি গরম ও বৈদ্যুতিক চার্জে ভরা গ্যাস দিয়ে তৈরি বিশাল আকারের মহাজাগতিক বস্তু৷ তার ভেতরের উত্তাপ ও চাপের মাত্রা এত বেশি, যে হাইড্রোজেনের মতো হালকা পারমাণবিক নিউক্লিয়াস হিলিয়ামের মতো ভারি পদার্থে রূপান্তরিত হয়৷

এই পারমাণবিক ফিউশনের কারণেই তারা জ্বলজ্বল করে৷ তার মধ্যে একটি নক্ষত্র কার্যত আমাদের দুয়ারেই রয়েছে৷ তা হলো সূর্য৷ এটিই একমাত্র নক্ষত্র, যার চরিত্র বুঝতে বিজ্ঞানীরা বিস্তারিতভাবে পরীক্ষা চালাতে পারেন৷ পৃথিবীর তুলনায় সূর্যের আয়তন বিশাল হলেও নক্ষত্রজগতে তার আয়তন বামনের মতো ৷ জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা ঔজ্জ্বল্য ও রং অনুযায়ী নক্ষত্রগুলিকে কয়েকটি গোষ্ঠীতে বিভক্ত করেন৷ একটি কাল্পনিক রেখা বরাবর বেশিরভাগ নক্ষত্রের দেখা মেলে ৷ তার মাঝামাঝি জায়গায় আমাদের সূর্যের অবস্থান৷ খুবই সাধারণ নক্ষত্র এটি৷

সূর্য ও নক্ষত্রজগতের রহস্য উন্মোচনের প্রচেষ্টা
ছবি: bengali.oneindia.com

সবচেয়ে ছোট নক্ষত্রগুলির নাম লাল বামন৷ সেগুলির হাইড্রোজেন ধীর গতিতে জ্বলে বলে সেগুলির অনেক বয়স হতে পারে৷ কয়েক হাজার কোটি বছর আয়ু বিরল ঘটনা নয়৷ সেই তুলনায় আমাদের সূর্য প্রায় ১,২০০ কোটি বছর ধরে উজ্জ্বল থাকতে পারে৷ এই কুয়াশার মধ্যে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের জানা মতে সবচেয়ে ভারি নক্ষত্র বাসা বেঁধেছে৷ কী করে সেটির এত পরিমাণ ভর হলো, গবেষকদের কাছে তা এক বড় রহস্য৷ সূর্যের তুলনায় তার আয়তন প্রায় ২৬০ গুণ বড় ও তার ঔজ্জ্বল্য ১ কোটি গুণ বেশি! এমন নক্ষত্রের জ্বালানি ফুরিয়ে গেলে সেটি সুপারনোভা হয়ে উঠবে৷ তার মৃতদেহের আয়তনও সঙ্কুচিত হবে৷ এমনকি কৃষ্ণ গহ্বরও হয়ে উঠতে পারে৷ সেই প্রক্রিয়ার আওতায় সেটি তার মধ্যে জমা রাসায়নিক পদার্থ মহাকাশে নিক্ষেপ করবে ৷

এমন পদার্থ গ্রহ ও জীবজগতের কাঁচামাল৷ আমাদের শরীরের সব উপকরণ, এমনকি রক্তের আয়রনও নক্ষত্রের মাধ্যমে পৃথিবীতে এসেছিল ৷ সূর্যের আলো ও উত্তাপ ছাড়া পৃথিবী মৃত এক গ্রহ থেকে যেত ৷ সেটি আমাদের প্রাণের উৎস৷ আমাদের চোখে সূর্য অত্যন্ত শান্ত এক মহাজাগতিক বস্তু ৷ কিন্তু স্যাটেলাইটের কল্যাণে আমরা সূর্যের মধ্যে তীব্র আলোড়নের কথা জানি ৷ বৈদ্যুতিক চার্জে ভরা কণা বার বার মহাকাশে ছড়িয়ে পড়ে ৷ এমন সৌর ঝড় পৃথিবীও ছুঁয়ে যায় ৷ তারই এক নিরীহ রূপ হলো মেরু অঞ্চলের আলোর ছটা ৷ তবে সৌর কণা নাজুক প্রযুক্তি ও জীবজগতের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে ৷

সূর্য ও নক্ষত্রজগত
ছবি: bengali.oneindia.com

বিশালাকার টেলিস্কোপের মাধ্যমে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা দূরের নক্ষত্রের উপর নজর রাখছেন৷ শুধু সেগুলির আলোর ভিত্তিতেই তাঁরা এই কাজ করছেন৷ চৌম্বক ক্ষেত্র সংক্রান্ত তথ্যের সাহায্যে এই সব নক্ষত্রের পরিবেশ সম্পর্কে আরও ভালো ধারণা করা সম্ভব৷ সেখানে পৃথিবীর মতো বাসযোগ্য গ্রহ আছে কিনা, সে বিষয়েও কিছু ধারণা পাওয়া যায়৷

Related posts

ভারতের ডিজিটাল আইন মেনে নিল টুইটার

News Desk

পুলিশের ‘হ্যালো এসবি অ্যাপ’ উদ্বোধন

News Desk

মঙ্গলেও শ্বাস নিতে পারবে মানুষ! প্রথম অক্সিজেন তৈরী করল মার্স রোভার

News Desk

Leave a Comment