Image default
জানা অজানা

আমরা হাই তুলি কেন?

জন্মের পর থেকেই হাই তুলতে শুরু করে মানুষ। ঘুম থেকে ওঠার পর প্রায়ই আমরা হাই তুলি। আবার খুব বেশি ঘুম পেলেও হাই তুলি। ছোট্ট নবজাতক থেকে দাদু-দাদিমা পর্যন্ত সবাই হাই তুলে অভ্যস্ত। যদি প্রশ্ন করা হয় এখন অব্দি জীবনে কতবার হাই তুলেছেন আপনি? নিশ্চিয়ই উত্তর দিতে পারবেন না। হাই তোলার হিসাব করাও কঠিন ব্যাপার।

আমরা যখন চাপের মধ্যে থাকি, বা প্রচন্ড ক্লান্ত হয়ে পরি বা বিক্ষুব্ধ অবস্থায় থাকি তখন মস্তিষ্কের একেবারে ভিতরের দিকের অংশের তাপমাত্রা বেশ বেড়ে যায়। তাছাড়া এই তাপমাত্রা পরিবর্তনের সাথে ঘুমচক্রেরও সম্পর্ক আছে। এই সময় আমাদের হাই ওঠে যার ফলে বাইরে থেকে মুখের মাধ্যমে সরাসরি ঠান্ডা বাতাস মুখগহ্বরে প্রবেশ করে এবং গালের রক্তনালীর রক্ত ঠান্ডা করে। আর মুখমন্ডলের রক্তনালীর সাথে মস্তিষ্কের যেহেতু খুব সংক্ষিপ্ত দুরত্বের সংযোগ তাই এই ঠান্ডা রক্ত অল্প সময়ে মস্তিষ্কে পৌঁছে মস্তিষ্ক ঠান্ডা করে।

হাই একটি সংক্রামক বৈশিষ্ট্য। একজনের হাই উঠলে তার আশেপাশে অবস্থিত অন্যান্যদেরও হাই উঠে। এই কারণটি বিবর্তনঘটিত। মানুষ যখন আদিকালে এখনকার তুলনায় নানাবিধ বিপদের মধ্যে বাস করত তখন দলবদ্ধভাবে নিজের গোত্রগুলোকে পাহারা দিত বা আরো বেশী সতর্ক দৃষ্টিতে থাকতে হতো। এই কারণে মস্তিষ্কের কার্যকারীতা যথাযথ রাখার জন্য একজনের হাই উঠলে তা পুরো দলটির মধ্যে ছড়িয়ে গিয়ে পুরো দলের মাধ্যেই সতর্কাবস্থা জারি রাখত। গবেষণায় দেখা গেছে যার সাথে যার রক্তের সম্পর্ক প্রবল তাদের মধ্যে হাই অপেক্ষাকৃত বেশি সংক্রামিত হয়।

শুধু মানুষ নয় জগতের নানাবিধ পশুপাখির মধ্যে হাই ওঠার প্রবণতা আছে। ইঁদুরের ওপর করা একটি গবেষণায় দেখা যায়, তারাও ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় গরম আবহাওয়ার তুলনায় বেশি হাই তোলে। হাই তোলার একটি চমৎকার বিকল্প বাংলা প্রতিশব্দ আছে। এটি হলো ‘জৃম্ভন’।

Related posts

নিজের মুখটাকে খুঁজছে মানুষ

News Desk

পুরো বাংলাদেশের দেখা মেলে ‘স্বাধীনতা কমপ্লেক্সে’

News Desk

মঙ্গলে অ্যালিয়েন আর মর্ত্যে মনোলিথ, এ যেন আজব ধাঁধা!

News Desk

Leave a Comment