টাঙ্গাইলে বেড়েই চলছে চোখ ওঠা রোগীর সংখ্যা। সরকারি হাসপাতালে আউটডোরে সেবা নিতে আসা রোগীর প্রায় ৯০ ভাগ চোখের। এদিকে হাসপাতালসহ বাজারে দেখা দিয়েছে চোখের ড্রপের সংকট। দ্বিগুণ দামেও পাওয়া যাচ্ছে না।
সরেজমিনে বিভিন্ন স্থানে দেখা যায়- রাস্তায় অসংখ্য মানুষ কালো চশমা পড়ে যাতায়াত করছেন। হাসপাতালেও একই অবস্থা। প্রতিবছর গ্রীষ্মে চোখ ওঠা রোগের দেখা মিললেও এবার শরতে প্রভাব বেড়েছে। রোগীদের চোখের পাতা ফুলে লাল, চোখ থেকে অনবরত পানি ঝরছে। রোগীরা চোখের যন্ত্রণায় অসহ্য হয়ে যাচ্ছেন। জেলা শহর থেকে শুরু করে উপজেলা, এমনকি প্রত্যন্ত গ্রামেও ছড়িয়ে গেছে এ রোগ।
টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে দেখা যায় বয়স্ক থেকে শিশু প্রতিদিন গড়ে শতাধিক চোখের রোগী চিকিৎসা নিতে আসছেন। জেলার অন্যান্য সরকারি হাসপতালগুলোরও একই দৃশ্য। অনেকেই পাচ্ছেন না ড্রপ। ফলে বিপাকে পড়ছেন রোগীরা। ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই বাইরের ফার্মেসি থেকে ড্রপ কিনে ব্যবহার করছেন রোগীরা। কালিহাতী উপজেলার দৌলতপুর উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দেখা যায় নারী পুরুষ শিশু অধিকাংশই চোখের সেবা নিতে এসেছেন। ড্রপ না থাকায় তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
আবু সাঈদ নামের অনার্স পড়ুয়া ছাত্র বলেন আমি ৭ দিন ধরে চোখের সমস্যায় ভুগতেছি। হাসপাতালে গিয়ে দেখি অসংখ্য রোগী। পরে চলে এসেছি। বাইরেও যাই কালো চশমা পড়ে। ড্রাপ দিয়েও তেমনটা কাজে আসছে না। রাসেল মিয়া নামের এক ভ্যানচালক বলেন আমি একাধিক ঔষধের দোকানে ঘুরেছি। ড্রপ পাওয়া যায় না। জয়দেব মোদক বলেন, সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি দুচোখ লাল। তাকাতে পারছি না। বাড়ির আরো কয়েকজনেরও একই অবস্থা।
টাঙ্গাইল শহর ও উপ-শহর এলেঙ্গার একাধিক ঔষধের দোকানে গিয়ে জানা যায় অতিরিক্ত দামে বিক্রি হচ্ছে চোখের ড্রপ। আবার সরবরাহ না থাকার অজুহাতে রোগীদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অসাধু ব্যবসায়ীরা ৩০-৫০ টাকার ড্রপ ৬০-১৪০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছেন।
টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক লুৎফর রহমান আজাদ কালের কণ্ঠকে বলেন, চোখ ওঠা রোগটি মূলত ছোঁয়াচে ও ভাইরাসের মাধ্যমে সংক্রমিত হয়। আক্রান্তরা তিন দিনে ভালো হয়ে যান। আবার অনেকের তিন সপ্তাহ পর্যন্ত সময় লেগে যায়। সচেতন থাকলে ভয়ের কিছু নেই। আক্রান্ত হলে তাকে বাড়িতে থাকা উচিত। তবে প্রয়োজনে বাইরে গেলে চোখে কালো চশমা ব্যবহার করতে হবে।